চট্টগ্রিমে:
"মিলাদুন্নবী এর নামে চলছে ব্যপক চাদাবাজী
এক ধরনের নেককার বান্দাদের দৌরাত্ব চলছে রবিউল আউয়াল মাস জুড়ে। মাথায় টুপি লাগিয়ে পাড়ার প্রভাবশালীরা মোটা অংকের টাকার রসিদ ধরিয়ে দিচ্ছে বাসায় বাসায়, দোকানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। আসে একসাথে চার/পাচ জন বা তারো বেশী। কোমড়ে পিস্তল লুকিয়ে রাখা ছেলে গুলো যেমন আচরন করে তাদের আচরন তার চেয়ে কয়েক গুন গরম। কেউ কম দিতে চাইলে হবে না। এর কমে নেয়া যাবেনা। কেনো দেয়া যাবেনা তার কৈফিয়ত দিতে হবে সবাইকে। তাদের মন মতো না হলে এরপর আর শান্তিতে থাকা যাবেনা। অমুসলিমদের কাছেও আসে এসব চাদার রসিদ। তাদেরকেও দিতে হবে। কারন তারা এই সমাজে থাকে।
এরা তাদের জন্য একটা ইসলাম তৈরি করেছে। এর বৈধতা দিচ্ছে কিছু ভন্ড পেট পুজারী তথাকথিত হুজুর। সারা মাস জুড়ে বিস্তৃত এলাকায় মাইক লাগিয়ে মানুষেকে বিরক্ত করে তাদের কিছু বানী তারা প্রচার করে, রাসুল (সঃ) নূরের তৈরী, তিনি গায়েব জানেন, তিনি হায়াতে নবী, জিন্দা নবী, তার উছিলায় সব সৃষ্টি করা হয়েছে, আর মিলাদুন্নবী বৈধ। আর এগুলো না মানলে সে কাফের, এগুলো না মানলে নবীর শান মানের উপর আঘাত করা হয়।
এগুলাই কি ইসলাম? নবুয়্যতের শুরু থেকে সাহাবীদের সময় পর্যন্ত বা ইমামদের কাছেও এসব কোন বিষয়ের কি কোন গুরুত্ব ছিল? রাসুল (সঃ) তো শুধু মুসলমানদের জন্য আসেন নি, এসেছেন পুরো মানব জাতীর জন্য, তেমনি কুরআন সব মানুষের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ যারা জ্ঞানের অনুসন্ধান করে। তাহলে কেন রাসুল (সঃ) এবং কুরআন সবার কাছে এতো গুরুত্বপূর্ণ হলো? তিনি নূরের তৈরি বলে? হায়াতে নবী জিন্দা নবী বলে? তিনি গায়েব জানেন তাই? নাকি তাঁর প্রদর্শিত পথ এবং নির্দেশনার জন্য?
অথচ এরা সারা রাত জুড়ে নিজেকে নবীর এমন আশেক দাবী করে, নবীর প্রেমে তারা পাগল হয়ে যায়। কথায় কথায় পেয়ারে নবী। যারা এগুলো বিশ্বাস করবে বা মানবে তারাই শুধু নবীর আশেক। বাকিরা সবাই নবী বিরোধী! আগেই বলেছি এলাকার কোন শ্রেণীর লোক এগুলোর দায়ীত্বে থাকে। এরা যেমন সব কিছু নিজেদের গায়ের জোড়ে করে তেমনি বেহেশতও তাদের গায়ের জোড়ে নিয়ে নিবে। সরকারী খাশ জমি দখল করার মতো বেহেশতও দখল করা যাচ্ছে। কারন তাদের এসব হুজুর সে পথেই নিয়ে যাচ্ছে।
এরা এমন মুসলমান, সামাজিক মিডিয়াতে ভিন্ন মতাবলম্বীদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি থেকে শুরু করে সব ধরণের বাজে কাজ গুলো তারা করে। একজন লোক সে এমনকি নাস্তিক হোক, তাকে গালি দেয়ার অধিকার তোমাকে কে দিয়েছে। গালাগালি করে তুমি নিজেকে কেমন মুসলমান দাবী করো? যে লোকের মুখ থেকে অন্য মানুষ নিরাপদ নয় তাকে তো রসুল (সঃ) মুসলমান হিসেবেই স্বীকার করেননি। এরাই এসব তথাকথিত নেককার বান্দা।
আমার কিছু প্রশ্ন:
ইসলামকে যারা নিজেদের স্বার্থে বিকৃত করে যাচ্ছে তাদের কি আল্লাহ্ কোনদিন ক্ষমা করবেন? কেয়ামতের দিন মুসলমান হিসেবে তাদের কোন পরিচয় থাকবে? রাসুল (সঃ) এর জন্মদিন কবে এটা নিয়ে কোন সাহাবী কখনো প্রশ্ন করেছিলেন (সহী হাদীস থাকলে রেফারেন্স দিবেন)? বা আরবে তখন জন্মদিন নিবন্ধনের বা নোট করার কোন রেওয়াজ ছিল?"
সোর্স: ফেইসবুক পোস্ট।